জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তি: তিথি নয়, ভবিষ্যতের নির্ধারক!
জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তি, অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ দিন, বাংলা ক্যালেন্ডারের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০২৫ সালে এটি পড়েছে রবিবার, ফলে জ্যোতিষ মতে সূর্যপ্রণামের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এটি শুধু একটি সংক্রান্তি নয়, বরং সূর্য ও সর্পদেবীর সঙ্গে জড়িত শক্তিশালী কসমিক পরিবর্তনের সময়।
এই সংক্রান্তিকে আবার বলা হয় “বিষ সংক্রান্তি”, কারণ এই সময় থেকেই শুরু হয় বর্ষাকাল তথা সাপের উপদ্রবের ঋতু। তাই মা মনসাদেবীকে তুষ্ট করার বিশেষ আচার পালিত হয় এই দিনে।
🐍 কেন মা মনসাকে তুষ্ট করতেই হবে এই দিনে?
🌿 বিশ্বাস ও অভিজ্ঞতায় যা উঠে এসেছে—
- আষাঢ় মাসে সাপের উপদ্রব রুখতে জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তির দিন মনসাদেবীর পুজো করা আবশ্যক।
- যাঁরা এই দিনে পুজো করেন না, তাঁদের পরিবারে রোগব্যাধি, অপঘাত, আর্থিক সংকট ও দাম্পত্য কলহ দেখা যায়—এমনটাই বলে বহু পুরাতন পুঁথি।
- মনসাদেবী কেবল বিষরোধীই নন, তিনি সম্পদ ও সন্তানেরও দেবী।
🙏 পালনীয় গুরুত্বপূর্ণ রীতিনীতি ও টোটকা
🔴 কি খাবেন, আর কি খাবেন না!
❌ যা একেবারেই নিষিদ্ধ:
- আমিষ আহার
- নেশাদ্রব্য (মদ, গাঁজা, তামাকজাত দ্রব্য)
- কোনও ধরণের চুল-দাড়ি-গোঁফ কাটা
✅ যা অবশ্যই খেতে হবে:
- সজনে শাক – যা মনসাদেবীর প্রিয়
- করলা ও কেলে করলা ভাজা – জীবনে "বিষ" নিবারণ করে বলে বিশ্বাস
- খেসারির ডাল – দুর্ভাগ্য রোধে সহায়ক
- আমড়া, উঁশি আম, টক জাতীয় খাবার – শরীর ঠান্ডা ও শুদ্ধ রাখে
- তেঁতুল বা আমচাটনি – আত্মিক সংযম ও মন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
🔔 বিশেষ টিপস: খাবার খাওয়ার আগে মা মনসার নাম স্মরণ করে একটি নিমপাতা মুখে দিন। এটি শুধুই রীতি নয়, এক প্রাচীন তান্ত্রিক টোটকা।
🌼 পুজোর রীতি: ঘরোয়া ভাবেও করতে পারেন মনসা পূজা
🪔 যা যা লাগবে:
- সাদা কাপড়ে বাঁধা মনসা প্রতীক বা ছবি
- দুর্বা, সাদা ফুল, গাঁদা ফুল, নিমপাতা
- দুধ, দই, মধু, চিনি – পঞ্চামৃত
- কাঁচা দুধে স্নান করিয়ে দেবীর সামনে শোধিত করলা নিবেদন করুন
🙏 পুজোর পরে নিম্নলিখিত মন্ত্রটি উচ্চারণ করুন:
"ওঁ হ্রীং মনসাদেব্যৈ নমঃ" – ১০৮ বার জপ করুন
🌅 সূর্যপ্রণাম ও স্নান
- সকালবেলা সূর্যোদয়ের আগেই স্নান করে সূর্যকে জলের পাত্র দিয়ে প্রণাম করুন।
- এতে জীবনে পিতৃদোষ, আর্থিক সংকট ও অশুভ গ্রহের প্রকোপ কমে।
🔮 জ্যোতিষ টিপস এই দিনটির জন্য
- চন্দ্র ও রাহুর দোষ থাকলে এই দিন উপবাস করে সন্ধ্যায় মনসার পুজো করুন।
- বিষযোগ ও কালসপ্তমদোষ কাটাতে করলা, নিমপাতা ও ঘৃতকুমারীর রস একসঙ্গে মিশিয়ে পান করুন।
- শুক্লপক্ষের একাদশীতে জন্ম হলে এই দিন বিশেষ উপযোগী—দশম ঘরে দুঃখ কেটে যায়।
💰 “টাকার বর্ষা” হবে কিভাবে?
🌧️ এই দিনে যদি আপনি মনসা পূজার পাশাপাশি ১১টি করলা সিদ্ধ করে দান করেন কোনও গরিব বা ব্রাহ্মণকে, এবং নিজের বাড়ির পশ্চিম কোণে একটি নিমগাছের ডাল গেঁথে রাখেন, তাহলে গ্রহবাধা কেটে যায় এবং ধনাগম প্রবল হয় বলে বহু প্রাচীন জ্যোতিষ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তি কোনও সাধারণ দিন নয়। এটি প্রকৃতি ও অতীন্দ্রিয় শক্তির মধ্যেকার সংযোগের একটি বিশেষ সন্ধিক্ষণ। মনসাদেবীর আশীর্বাদ না পেলে সংসারে বিষ ঢুকে পড়ে—অর্থহীনতা, কলহ, শারীরিক কষ্ট ও মানসিক অস্থিরতা হয়। আর তাই, করলা ও নিমপাতা দিয়ে এই দিন শুরু করলেই বিষ নয়, বর্ষা নামবে টাকার!
🕉️ আরও বিস্তারিত জানতে বা ব্যক্তিগত জ্যোতিষ পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করুন: 9831498860 / 9831498861 / 8961165166 / 9903609484
Asian top 10 Astrologer Sri Joydeb Sastri