“ঘণ্টা”—একটা শব্দ, কিন্তু এর ধ্বনি ও শক্তির প্রভাব হাজার বছরের প্রাচীন বৈদিক, তান্ত্রিক ও মন্ত্রসিদ্ধ ঐতিহ্যের অংশ। আপনি যখন মন্দিরে ঢুকে একটি ঘণ্টা বাজান, তখন আপনি শুধু একটা ধ্বনি সৃষ্টি করছেন না—আপনি নিজের চারপাশে ও শরীরের অভ্যন্তরে এক ধরনের শক্তি তরঙ্গ জাগিয়ে তুলছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, ঘণ্টা কি সব সময় বাজানো উচিত?
সব দেব-দেবীর পুজোয় কি এটি উপযোগী?
আর কোন সময় বা কোন পরিস্থিতিতে এটি একেবারেই বাজানো উচিত নয়?
এই লেখায় আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজবো—তান্ত্রিক শাস্ত্র, বৈদিক নিয়ম এবং গোপন টোটকার দৃষ্টিভঙ্গিতে।
🕉️ ঘণ্টার শব্দ ও তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা: কী ঘটে যখন আপনি ঘণ্টা বাজান?
🔹 বৈদিক ব্যাখ্যা:
ঘণ্টা বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে যে "ধ্বনি তরঙ্গ" সৃষ্টি হয়, তা মূলত "নাদ ব্রহ্ম" অর্থাৎ মহাশক্তির নাদ রূপে পরিচিত।
এই নাদ:
- মস্তিষ্কের ডেল্টা তরঙ্গ (Delta Brain Waves) উদ্দীপিত করে
- মনকে ফোকাসড ও একাগ্র করে
- ভক্তি শক্তি জাগিয়ে তোলে
- নেগেটিভ শক্তিকে দুর করে
🔹 তান্ত্রিক ব্যাখ্যা:
তন্ত্রশাস্ত্রে ঘণ্টা হল "যোগমার্গের সচল উন্মোচনকারী"। অর্থাৎ এটি:
- মূলাধার থেকে কুণ্ডলিনী জাগরণের সূচনা করতে পারে (বিশেষ মন্ত্রোচ্চারণে)
- দেবী শক্তির ‘অবাহন’ বা নিমন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়
- তান্ত্রিক কবচে ঘণ্টার ধ্বনি রক্ষাকবচ রূপে কাজ করে (বিশেষত কালরাত্রি বা অভিচার তন্ত্র প্রয়োগের সময়)
তাই এটি কোনো সাধারণ যন্ত্র নয়। এটি একটি শক্তির বাহক।
🔔 কখন ঘণ্টা বাজানো উচিত?
১. মন্দিরে ঢোকার সময়:
মন্দিরে প্রবেশের ঠিক আগমুহূর্তে একটি ঘণ্টা বাজালে, তার ধ্বনি তরঙ্গ ভগবানের মূর্তিকে সচল করে তোলে।
বিশ্বাস করা হয়, এই শব্দে মূর্তি প্রাণবান হয়, এবং সেই মুহূর্তে প্রার্থনা করলে তার ফলাফল বহুগুণে বেড়ে যায়।
২. পূজা শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে:
তন্ত্র মতে, পূজার প্রথমে ঘণ্টা বাজালে চারপাশে পজিটিভ তড়িৎ তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। এটি ভবিষ্যৎ দোষ, দৃষ্টি, কিংবা বহিরাগত তমোগুণকে রুখে দেয়।
৩. মন্ত্রপাঠের সময়:
বিশেষ মন্ত্র পাঠ (যেমন শাবর মন্ত্র, বা দোষ নাশ মন্ত্র) চলাকালীন ঘণ্টা বাজালে:
- শব্দ তরঙ্গ ও মন্ত্রের কম্পন মিলিত হয়ে এক শক্তিশালী ‘আকৃষ্টি ক্ষেত্র’ গঠন করে
- যে কারণে তান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঘণ্টার ব্যবহার অপরিহার্য
🙏 কখন ঘণ্টা বাজানো উচিত নয়?
❌ ১. মন্দির থেকে বেরোনোর সময়:
অনেকেই ভুল করে বেরোনোর সময় ঘণ্টা বাজান। কিন্তু এটি একেবারেই শাস্ত্রবিরোধী।
কারণ:
- এই সময় আপনার শরীর ও চেতনাবোধ পূজার পর একটি স্নিগ্ধ ও শুদ্ধ অবস্থায় থাকে
- ঘণ্টার শব্দ তখন সেই স্থিতিশীলতাকে ভেঙে দেয়
- ফলে পজিটিভ শক্তি নষ্ট হয়, তার জায়গা নেয় নীরব শূন্যতা
❌ ২. লক্ষ্মী পুজোর সময়:
মা লক্ষ্মী অত্যন্ত কোমল ও সৌম্য প্রবৃত্তির দেবী।
তাঁর আরাধনায় শব্দ, উচ্চতা বা আন্দোলন অপছন্দনীয়।
তন্ত্র মতে:
- মা লক্ষ্মী "অচঞ্চলা" শক্তি—অর্থাৎ যাকে জাগাতে হলে নীরবতা ও স্থিরতা প্রয়োজন
- ঘণ্টার শব্দ তাঁর পছন্দ নয়, বিশেষ করে বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মী পূজা বা কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোতে
ঘণ্টা বাজালে তিনি তাত্ক্ষণিক স্থানে বিরক্ত হয়ে নিজ অবস্থান ত্যাগ করেন, ফলে ঘরে দারিদ্র্য ও অশান্তি দেখা দিতে পারে।
🔮 তান্ত্রিক টিপস ও গোপন টোটকা:
✦ টোটকা ১:
মঙ্গলদোষে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগে একটি তামার ঘণ্টা বাজিয়ে ‘ওম ক্রৌম শ্রী হনুমতে নমঃ’ ১১ বার জপ করুন।
⚡ এতে রক্তচাপ, রাগ, আর্থিক ক্ষতি ও আদালতের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
✦ টোটকা ২:
যদি মনে হয় ঘরবাড়িতে অশুভ শক্তি বা কালোজাদুর প্রভাব রয়েছে, তাহলে:
- একটি ঘণ্টা নিয়ে শনিবার সন্ধ্যাবেলা প্রদীপের পাশে রেখে ঘরের উত্তর-পূর্ব কোণে ৩ বার টানা বাজান
-
সঙ্গে জপ করুন: "ওম অগ্নিসূচী বিভীষিকা মচ্যতামঃ"
💠 এতে তান্ত্রিক আক্রমণ রোধ ও রক্ষা কবচ তৈরি হয়
ঘণ্টা হলো আত্মার ঘুম ভাঙানোর যন্ত্র। এটি শুধু একটি ধাতব শব্দ নয়, বরং এটি ভক্তি, শক্তি ও চেতনার এক অপার অভিব্যক্তি।
কিন্তু তার ব্যবহার যেন উপযুক্ত সময়, উপযুক্ত দেবতা ও উপযুক্ত উদ্দেশ্যে হয়—তা না হলে শুভর বদলে অশুভ শক্তিই সক্রিয় হয়ে ওঠে।
জেনে-শুনে ঘন্টা বাজান। কারণ একটা শব্দই হয়তো আপনার জীবনের গতি ঘুরিয়ে দিতে পারে।
📲 যদি আপনি ঘরের লক্ষ্মী শক্তি বজায় রাখতে চান বা তান্ত্রিক ঘণ্টা সাধনার পূর্ণ পদ্ধতি শিখতে চান, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন:
🌐 www.51kalibari.com | 📞 +91-9831498861
🔱 শ্রী জয়দেব শাস্ত্রী (Tantra-Jyotish Specialist)
🔖 #GhontaMahima #TempleBellMystery #LakshmiPujaRules #TantraTotka #JoydebSastri #BellAndTantra #GhantaRemedy #HinduDharmo #ShaktiJagoron #SpiritualEnergy #TantrikGuru #51Kalibari #GhantaUpay