Skip to Content

রাশির খারাপ দিক: বারো রাশির অন্ধকার দিক উন্মোচন করলেন এশিয়ান টপ ১০ অ্যাস্ট্রোলজার শ্রী জয়দেব শাস্ত্রী

লেখক: Asian Top 10 Astrologer Sri Joydeb Sastri | Mahalaya Special
19 সেপ্টেম্বর, 2025 by
রাশির খারাপ দিক: বারো রাশির অন্ধকার দিক উন্মোচন করলেন এশিয়ান টপ ১০ অ্যাস্ট্রোলজার শ্রী জয়দেব শাস্ত্রী
জয়দেব শাস্ত্রী । ৫১কালিবাড়ি
জ্যোতিষশাস্ত্র আমাদের শুধু ভবিষ্যৎ জানায় না, বরং মানব-প্রকৃতির গভীর দিকগুলিকেও উন্মোচন করে। প্রতিটি রাশি যেমন আলোকিত গুণে ভরপুর, তেমনই তার অন্তরে লুকিয়ে থাকে কিছু অন্ধকার দিক—যা ব্যক্তির জীবনযাত্রা, সম্পর্ক, কর্মক্ষেত্র এমনকি মানসিক ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করে।
প্রাচীন বৈদিক জ্যোতিষ মতে, রাশিচক্র মানব জীবনের আয়না। প্রতিটি রাশির শক্তি যেমন জীবনে সাফল্যের পথ দেখায়, তেমনই তার দুর্বলতাগুলো জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই নিজের রাশির খারাপ দিক জানা মানে নিজেকে চেনা ও উন্নতির পথ খোঁজা।
চলুন এবার দেখি বারো রাশির খারাপ দিকগুলি, যা বহু শতাব্দী ধরে জ্যোতিষীরা পর্যবেক্ষণ করে আসছেন।

♈ মেষ (Aries) — হঠকারিতা ও তাড়াহুড়ো

মেষ রাশির জাতক-জাতিকারা উদ্দীপনা ও সাহসের প্রতীক। কিন্তু অতিরিক্ত তেজস্বিতা অনেক সময় তাদের সর্বনাশ ডেকে আনে।

  • এঁরা ভেবে চিন্তে নয়, আবেগে কাজ করেন।
  • নিজের মত চাপিয়ে দিতে গিয়ে সম্পর্ক নষ্ট করেন।
  • রাগের বশে এমন সিদ্ধান্ত নেন যা পরে অনুশোচনার কারণ হয়।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: মেষদের অতিরিক্ত উত্তেজনা প্রায়শই তাদের অস্থির করে তোলে, ফলে তারা শান্তি হারান।

ফলাফল: কর্মক্ষেত্রে ঝগড়া, দাম্পত্য সম্পর্কে দূরত্ব, এবং বন্ধু হারানোর প্রবণতা।

♉ বৃষ (Taurus) — অতিরিক্ত আরামপ্রবণতা ও একগুঁয়েমি

বৃষরা স্থিতিশীলতার প্রতীক হলেও তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো অতিরিক্ত স্বাচ্ছন্দ্যপ্রেম।

  • এঁরা ঝুঁকি নিতে চান না, ফলে উন্নতির সুযোগ নষ্ট হয়।
  • জীবনযাত্রায় পরিবর্তন মানতে পারেন না।
  • একগুঁয়ে স্বভাবের কারণে সম্পর্ক ভেঙে যায়।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: নিরাপত্তার খোঁজে এঁরা প্রায়ই স্থবির হয়ে পড়েন।

ফলাফল: কর্মজীবনে পিছিয়ে পড়া এবং মানসিকভাবে অলসতা বৃদ্ধি।

♊ মিথুন (Gemini) — অস্থিরতা ও দ্বিধা

মিথুনদের বুদ্ধি ও যোগাযোগ দক্ষতা প্রশংসনীয়। কিন্তু তাদের দুর্বলতা হলো স্থির থাকতে না পারা।

  • একসঙ্গে অনেক কাজ শুরু করেন, কিন্তু শেষ করতে পারেন না।
  • প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হন।
  • সম্পর্কেও দ্বিধাগ্রস্ত মনোভাব দেখা যায়।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: সব সময় নতুনত্ব খোঁজার ফলে স্থায়ী শান্তি পান না।

ফলাফল: বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারানো।

♋ কর্কট (Cancer) — অতিসংবেদনশীলতা ও অতীতে আটকে থাকা

কর্কটরা পরিবারমুখী হলেও তাদের অতিসংবেদনশীলতা বড় দুর্বলতা।

  • সামান্য আঘাতকেও মনে গেঁথে রাখেন।
  • সহজে কাউকে ক্ষমা করতে পারেন না।
  • প্রায়ই নেতিবাচক চিন্তায় ডুবে যান।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: এঁরা অতীতের দুঃখ ভুলতে না পেরে ভবিষ্যতের দিকে এগোতে পারেন না।

ফলাফল: আত্মবিশ্বাস কমে যায়, সম্পর্ক ভঙ্গুর হয়ে ওঠে।

♌ সিংহ (Leo) — অহংকার ও প্রশংসালিপ্সা

সিংহরা স্বাভাবিক নেতৃত্বগুণে উজ্জ্বল। কিন্তু দুর্বলতা হলো অহংকার।

  • সর্বদা কেন্দ্রবিন্দু হতে চান।
  • প্রশংসা না পেলে ক্ষুব্ধ হন।
  • অন্যের মতামতকে পাত্তা দেন না।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: নিজের গুরুত্বের প্রতি আসক্তি এঁদের একাকী করে তোলে।

ফলাফল: কাছের মানুষ দূরে সরে যায়, কর্মক্ষেত্রে বিরোধ বাড়ে।

♍ কন্যা (Virgo) — অতিরিক্ত সমালোচনা ও খুঁতখুঁতানি

কন্যারা নিখুঁত কাজ পছন্দ করেন। কিন্তু সেই পারফেকশন খোঁজা অনেক সময় সমস্যা তৈরি করে।

  • সামান্য ভুলও মেনে নিতে পারেন না।
  • অন্যকে বারবার সমালোচনা করেন।
  • নিজের মানসিক চাপ বাড়ান।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: খুঁতখুঁতানির ফলে অপ্রসন্নতা জন্মায়।

ফলাফল: সম্পর্কের টানাপোড়েন ও কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের বিরক্তি।

♎ তুলা (Libra) — অস্থিরতা ও সিদ্ধান্তহীনতা

তুলারা সমতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক হলেও সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দুর্বল।

  • সময়মতো পদক্ষেপ নিতে দেরি করেন।
  • অন্যকে খুশি করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করেন।
  • জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হারান।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: সব সময় দ্বিধায় ভুগে মানসিক শান্তি হারান।

ফলাফল: জীবনের অগ্রগতি থেমে যায়, আত্মবিশ্বাস কমে যায়।

♏ বৃশ্চিক (Scorpio) — কর্তৃত্বপরায়ণতা ও প্রতিহিংসা

বৃশ্চিকরা গভীর আবেগী ও রহস্যময়। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণকামী স্বভাব অনেককে বিরক্ত করে।

  • সব কিছুর উপর কর্তৃত্ব ফলাতে চান।
  • শত্রুতা দীর্ঘদিন মনে রাখেন।
  • সন্দেহবাতিকগ্রস্ত হয়ে ওঠেন।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: অবিশ্বাসের কারণে মানসিক অশান্তি।

ফলাফল: সম্পর্ক নষ্ট হয়, মানসিক চাপ বাড়ে।

♐ ধনু (Sagittarius) — অসংযম ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ

ধনুরা স্বাধীনচেতা হলেও স্থায়ীভাবে কিছু ধরে রাখতে পারেন না।

  • কথা দিয়ে কথা রাখেন না।
  • কাজ ও সম্পর্কের প্রতি একনিষ্ঠ থাকেন না।
  • নতুনত্বের খোঁজে পুরনোকে ছেড়ে দেন।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: অতিরিক্ত স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা একাকিত্ব তৈরি করে।

ফলাফল: সম্পর্ক টেকে না, কর্মক্ষেত্রে ভরসা হারান।

♑ মকর (Capricorn) — অতিরিক্ত কর্মনেশা

মকররা কর্মঠ, কিন্তু কাজের নেশাই তাদের ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা আনে।

  • কাজকেই জীবনের কেন্দ্র করেন।
  • পরিবার ও নিজের আবেগ উপেক্ষা করেন।
  • আনন্দ উপভোগ করতে জানেন না।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: কাজের চাপে মানসিক শূন্যতা জন্মায়।

ফলাফল: পরিবার থেকে দূরত্ব, একাকিত্ব ও মানসিক চাপ।

♒ কুম্ভ (Aquarius) — অতিরিক্ত যুক্তিবাদিতা ও আবেগহীনতা

কুম্ভরা সৃজনশীল হলেও অতিরিক্ত যুক্তিনির্ভর।

  • মনের বদলে সব সময় মাথার কথা শোনেন।
  • আবেগ প্রকাশে অক্ষম।
  • কাছের মানুষের অনুভূতি অবহেলা করেন।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: মানবিক সম্পর্কের উষ্ণতা হারান।

ফলাফল: সম্পর্কের দূরত্ব ও একাকিত্ব।

♓ মীন (Pisces) — স্বপ্নালু ও বাস্তববোধের অভাব

মীনরা কল্পনায় বাঁচেন। কিন্তু বাস্তব থেকে বিচ্ছিন্নতা তাদের ক্ষতি করে।

  • বাস্তব সমস্যাকে এড়িয়ে যান।
  • সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন।
  • হতাশায় ভোগেন।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: অতিরিক্ত কল্পনা তাদের বাস্তব জীবনে দুর্বল করে তোলে।

ফলাফল: সুযোগ হারানো, কর্মজীবনে ব্যর্থতা, সম্পর্ক ভাঙন।

উপসংহার

প্রতিটি রাশির মধ্যেই গুণ ও দোষ মিলেমিশে রয়েছে। জ্যোতিষশাস্ত্র শুধু ভবিষ্যদ্বাণী করে না, বরং আমাদের দুর্বলতাকে চিনে তা কাটিয়ে ওঠার শিক্ষা দেয়। নিজের রাশির নেতিবাচক দিক জানা মানেই উন্নতির দিকে প্রথম পদক্ষেপ। কারণ আত্ম-চেতনা ছাড়া আত্মোন্নতি সম্ভব নয়।

👉 লেখক: Asian Top 10 Astrologer Sri Joydeb Sastri

রাশির খারাপ দিক: বারো রাশির অন্ধকার দিক উন্মোচন করলেন এশিয়ান টপ ১০ অ্যাস্ট্রোলজার শ্রী জয়দেব শাস্ত্রী
জয়দেব শাস্ত্রী । ৫১কালিবাড়ি 19 সেপ্টেম্বর, 2025
Share this post
Tags
Archive