গুরুপূর্ণিমা মানেই শুধু শ্রদ্ধা নয়—এই ৭টি গুপ্ত তন্ত্রীয় টোটকা মানলেই খুলবে ভাগ্যের গেট!
তন্ত্র, পুরাণ ও জ্যোতিষে প্রতিষ্ঠিত গুরু তিথির গোপন শক্তি আজ প্রকাশ পাবে এই সাত আচারে!
✍️ লিখেছেন: Asian Top 10 Astrologer Sri Joydeb Sastri
📿 প্রকাশনায়: JD Astro Consultancy and Academy
📅 ১০ জুলাই ২০২৫ | আষাঢ়ী পূর্ণিমা | লক্ষ্মীবার
🌕 গুরুপূর্ণিমার প্রকৃত তাৎপর্য:
গুরুপূর্ণিমা শুধু একজন গুরুর পাদপদ্মে শ্রদ্ধা নিবেদনের দিন নয়। এই দিনটি আসলে তিব্বতীয়, বৈদিক এবং তান্ত্রিক ভারতীয় ত্রিক সংস্কৃতির মিলনবিন্দু।
- বৈদিক মতে, বৃহস্পতি দেব এই দিনে শক্তিতে পরিপূর্ণ হন।
- পুরাণ অনুসারে, এই তিথিতেই ব্যাসদেব মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন এবং গুরুশিষ্য পরম্পরার সূচনা ঘটে।
- তান্ত্রিক মতে, এই পূর্ণিমা নবগ্রহের মধ্যে বৃহস্পতির শক্তিকে সক্রিয় করার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী রাত। এই রাতে তপস্যা, তন্ত্রসাধনা ও অর্থ-সিদ্ধির টোটকা ফলপ্রসূ হয়।
🪔 গুরুপূর্ণিমার ৭টি প্রাচীন ও গোপন তান্ত্রিক টোটকা
🔮 ১. “ব্যাসপাদ তন্ত্র” অনুসারে গঙ্গাস্নান ও শ্বেতবস্ত্র দান:
পূর্বদিকে মুখ করে সূর্যোদয়ের সময় গঙ্গাস্নান করুন। না পারলে নিকটবর্তী জলাশয়েও চলবে।
স্নানের পর একটি সাদা বস্ত্রে (পিতাম্বর বা শ্বেতধৌত বস্ত্র) পাঁচটি তিল, সাতটি তুলসীপাতা ও একমুঠো চাল জড়িয়ে কোনও পুরোহিত বা গুরুজনে দান করুন।
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: পূর্বজন্মের পাপ ক্ষয় হয়, গুরুদোষ বা বৃহস্পতিদোষের মুক্তি ঘটে।
🔱 ২. গুরুদেব না থাকলেও গৃহগুরু প্রতিষ্ঠা করুন (তন্ত্রীয় রীতি):
সকালে উঠে পূর্বদিকে মুখ করে একটি সিঁদুর মাখানো পাথরে “গুরুর উপাসনাস্তম্ভ” তৈরি করুন।
তার সামনে ৫টি সাদা ফুল রেখে বলুন—
“ওঁ গুরুদেবায় নমঃ। তুমি-ই আমার পথপ্রদর্শক। আমাকে জ্ঞান দাও, শক্তি দাও।”
তারপর তামার পাতায় হলুদ দিয়ে নিজের নাম লিখে রাখুন।
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: মনের অস্থিরতা দূর হয়, কর্মে সফলতা আসে।
🔥 ৩. চতুর্দিকে ত্রিশক্তি দীপ স্থাপন (তান্ত্রিক বৃত্ত পদ্ধতি):
বাড়ির চার কোণে জ্বালান ৪টি বিশেষ প্রদীপ—
প্রতিটি প্রদীপে দিন:
- এক চিমটে হলুদ
- এক টুকরো গুড়
- সামান্য চাল
- ১টি গোটা লং
-
ঘি
এই চারটি প্রদীপ মিলিয়ে তৈরি হবে “চতুর্দেশিক ত্রিশক্তি বৃত্ত”।
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: সংসারের উপর শত্রুবন্ধন, দারিদ্র্যযোগ বা কালসর্পের ছায়া কাটে।
💰 ৪. কুবের-লক্ষ্মী আরাধনার তন্ত্রীয় টোটকা (রাত্রি ১১টায়):
রাত্রি ১১টার সময় বাড়ির উত্তর দিকে একটি রূপার থালায় রাখুন—
- ১টি আম
- ১টি নারকেল
- ৫টি এলাচ
- ৭টি কাঁচা হলুদ
-
৫০০ টাকার একটি নোট
তার সামনে ৩টি ধূপ, ৩টি দীপ এবং লক্ষ্মী-কুবেরের ছবি স্থাপন করে “শ্রীম কুবেরায় নমঃ” মন্ত্র ৫৪ বার জপ করুন।
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: অচিরেই হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি বা আটকে থাকা টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা থাকে।
🌿 ৫. তুলসী তন্ত্র এবং বাতি-জ্যোতিষ টোটকা:
আজ সন্ধ্যায় তুলসীমঞ্চে ঘিয়ের প্রদীপে ৭টি তুলসীপাতা ও একটি গোটা লবঙ্গ দিয়ে জ্বালান।
প্রদীপের চারপাশে রাখুন ৫টি হলুদ ফুল। তারপর বলুন—
“তুলসী তন্ত্রে রক্ষিণী শক্তি, শান্তি ও সমৃদ্ধি দাও।”
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: গৃহে দেবতাত্মার আবাহন ঘটে, ভূতপ্রেত বা অশুভ শক্তি দূর হয়।
🕯️ ৬. গুরুপদ পুজো না পারলে “ত্রিকোণ প্রদীপ স্থাপন”:
গুরুর অনুপস্থিতিতে একটি সাদা রঙের কাপড়ে তিনটি প্রদীপ ত্রিভুজাকারে স্থাপন করুন।
প্রদীপগুলিতে হলুদ চন্দন, ঘি, ও এক ফোঁটা গঙ্গাজল দিন। প্রদীপ জ্বালিয়ে বলুন—
“ওঁ গুরুব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণু গুরুরদেবো মহেশ্বরঃ...”
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: জীবনের বন্ধ রাস্তাগুলি খুলে যায়, হঠাৎ পজিটিভ পরিবর্তন আসে।
🌕 ৭. কলাগাছে গোপন ত্র্যশক্তি অর্পণ (রাত ১০টার পর):
একটি হলুদ কাপড়ে রাখুন—
- ১টি নারকেল
- ২টি পাকা আম
- ৫ টাকা কয়েন
-
৭টি হলুদ ফুল
এটি বেঁধে কলাগাছের গোড়ায় রেখে আসুন রাত ১০টার পর।
প্রার্থনা করুন—
“গুরুদেব, ত্রিগুণে জাগ্রত হোক, ভাগ্য খুলে দাও।”
📿 তান্ত্রিক ফলাফল: হঠাৎ ভাগ্যোন্নতি, বিদেশযাত্রার সুযোগ, পুরনো মামলা থেকে মুক্তি।
📖 পুরাণীয় দৃষ্টিতে গুরুপূর্ণিমার শক্তি:
- স্কন্দপুরাণে আছে, গুরুপূর্ণিমার রাতে যারা গুরুপূজা করে, তাদের জন্মজন্মান্তরের কর্মফল মুক্ত হয়।
- দেবীভাগবত মতে, এই দিনে বৃহস্পতি নিজ হাতে ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ চার পুরুষার্থের বীজ বপন করেন। তাই আজকের রাতে যে কোনও সংকল্প নেওয়া সফল হয়।
- কুলাচার তন্ত্রে বলা হয়েছে—"গুরুর পাদতলে থাকেই ত্রিলোকের রহস্য", তাই গুরুর পায়ে মাথা রাখার রাত্রি এই পূর্ণিমা।
গুরুপূর্ণিমা শুধু শ্রদ্ধার দিন নয়—এ হল আত্মিক শক্তির পুনর্জাগরণের দিন।
তন্ত্র, জ্যোতিষ ও পুরাণ এই তিথিকে এক অলৌকিক রূপ দিয়েছে। তাই শুধু গুরুকে প্রণাম নয়—গুরুপূর্ণিমার গভীর তান্ত্রিক টোটকা পালনে জীবনে আসে মুক্তি, ধন, স্থিরতা ও অলৌকিক আশীর্বাদ।