নবরাত্রি হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা প্রতি বছর চারবার পালিত হয়। এর মধ্যে চৈত্র ও শারদীয় নবরাত্রি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই নয় দিনের উৎসবে মা দুর্গার নয়টি রূপের পূজা করা হয়, যা ভক্তদের জন্য আধ্যাত্মিক শুদ্ধি ও ভক্তির প্রতীক। নবরাত্রি চলাকালীন কিছু নির্দিষ্ট জিনিস কেনা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। নিচে সেগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো:
১. আমিষ খাদ্য
নবরাত্রি সময়কালে আমিষ খাদ্য যেমন মাংস, মাছ ও ডিম কেনা ও খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এই সময়ে সাত্ত্বিক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে শরীর ও মনের শুদ্ধি সাধন করা হয়, যা আধ্যাত্মিক উন্নতির সহায়ক। তাজা ফল, সবজি, দুগ্ধজাত দ্রব্য ও শস্যজাতীয় খাদ্য এই সময়ে গ্রহণ করা হয়। The Times of India
২. লোহা ও লোহার বস্তু
ধারণা করা হয় যে, নবরাত্রি সময়ে লোহার বস্তু যেমন বাসনপত্র, সরঞ্জাম বা আসবাবপত্র কেনা অশুভ হতে পারে, কারণ এটি নেতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করতে পারে এবং পারিবারিক শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে। এর পরিবর্তে স্টেইনলেস স্টিল বা তামার বস্তু কেনা শ্রেয়। Indiatimes
৩. ইলেকট্রনিক সামগ্রী
ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা টেলিভিশন কেনা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এগুলো ভক্তদের আধ্যাত্মিক সাধনায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এবং ইতিবাচক শক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে বাধা হতে পারে। The Times of India
৪. কালো রঙের পোশাক
কালো রঙ সাধারণত শোক ও নেতিবাচকতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। নবরাত্রি সময়ে এই রঙের পোশাক কেনা বা পরিধান করা এড়িয়ে চলা উচিত। এর পরিবর্তে লাল, হলুদ, সবুজ ও গোলাপি রঙের উজ্জ্বল পোশাক পরিধান করা উৎসবের আনন্দ ও পবিত্রতা বৃদ্ধি করে।
৫. চাল
অনেক ভক্ত নবরাত্রি সময়ে উপবাস পালন করেন এবং শস্যজাতীয় খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। বিশেষ করে চালের মতো শস্য কেনা ও খাওয়া এড়িয়ে চলা হয়, কারণ এটি অলসতা ও জড়তা বৃদ্ধি করতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এর পরিবর্তে কুট্টু, রাজগিরা বা সিংহাড়ার মতো বিকল্প শস্য ব্যবহার করা হয়।
৬. ধারালো বস্তু
ছুরি, কাঁচি বা সূঁচের মতো ধারালো বস্তু কেনা থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ এগুলো দুর্ঘটনা বা নেতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করতে পারে বলে মনে করা হয়। নবরাত্রি সময়ে পারিবারিক শান্তি ও সুরক্ষা বজায় রাখতে এই ধরনের বস্তু কেনা এড়িয়ে চলা শ্রেয়।
নবরাত্রি সময়ে এই নির্দেশিকা অনুসরণ করে ভক্তরা তাদের আধ্যাত্মিক সাধনা ও পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে পারেন। এই নয় দিন পবিত্রতা, ভক্তি ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক, এবং সঠিক আচরণ ও সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমরা মা দুর্গার আশীর্বাদ লাভ করতে পারি।