🌑 জ্যৈষ্ঠ অমাবস্যায় পূজিত হন মা কালী রূপে ফলহারিণী — জানুন তিথি, মাহাত্ম্য, করণীয় টোটকা ও পূজার নিয়ম
🔮 ফলহারিণী কালী কে?
‘ফলহারিণী’ শব্দের আধ্যাত্মিক অর্থ — ফল হরণকারী, অর্থাৎ যিনি আমাদের জীবনের অশুভ কর্মফল হরণ করে নেন এবং শুভ ফল প্রদান করেন।
এই রূপে দেবী কালী পূজিত হন জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে, যা বিশেষভাবে ফলদায়িনী, কর্মফলনাশিনী এবং পরিবার কল্যাণময়ী পূজার তিথি হিসেবে স্বীকৃত।
📿 পুরাণীয় ও তান্ত্রিক প্রেক্ষাপট:
এই তিথিকে কেন্দ্র করে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় — ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব এই তিথিতেই মা সারদা দেবীকে ষোড়শী রূপে দেবী কালী হিসেবে পূজা করেছিলেন।
তাঁর বিশ্বাস ছিল, এই তিথিতে মা সত্য রূপে প্রকাশিত হন, আরাধনায় বিশেষ ফল দেন, এমনকি গুরুতর কর্মফলও লঘু হয়ে যায়।
📅 ফলহারিণী কালীপূজার ২০২৫ সালের সময়সূচি:
🔵 বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে:
-
অমাবস্যা তিথি শুরু:
🗓️ ২৬ মে, সোমবার (১১ জ্যৈষ্ঠ)
🕐 দুপুর ১২টা ১৩ মিনিট -
অমাবস্যা তিথি সমাপ্ত:
🗓️ ২৭ মে, মঙ্গলবার (১২ জ্যৈষ্ঠ)
🕐 সকাল ৮টা ৩২ মিনিট
🔵 গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা অনুসারে:
-
তিথি শুরু:
🗓️ ২৬ মে, সোমবার
🕐 সকাল ১১টা ৭ মিনিট ১৯ সেকেন্ড -
তিথি শেষ:
🗓️ ২৭ মে, মঙ্গলবার
🕐 সকাল ৮টা ৪৪ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড
🕯️ এই দিনে কী কী করা উচিত? (শুভ টোটকা ও কার্যপদ্ধতি)
🌸 ১. ফলহারিণী কালীপূজা:
- একটি কালো কাপড়ে মা কালীর ছবি রেখে, সিঁদুর, সাদা ফুল, তিল, কালো তিল ও ধূপ-দীপ দিয়ে পূজা করুন।
- সন্ধ্যায় দক্ষিণমুখী হয়ে পূজা করলে আরও ফলপ্রদ হয়।
🔮 ২. অশুভ কর্মফল থেকে মুক্তির জন্য টোটকা:
- শনিবার সূর্যাস্তের সময় নিজের ছায়া লোহার পাত্রে পড়ে এমনভাবে দাঁড়িয়ে, তাতে কালো তিল ও সরষের তেল দিন।
-
তারপর সেটি কোনো শ্মশান সংলগ্ন কালী মন্দিরে রেখে আসুন।
🔕 এই টোটকার কথা কাউকে বলা যাবে না।
💰 ৩. টাকার সমস্যা দূর করতে:
- একটি লাল কাপড়ে ১১টি কাঁচা হলুদ, কিছু গঙ্গাজল ও একটি রুদ্রাক্ষ বেঁধে মায়ের চরণে নিবেদন করুন।
- তারপর সেটি মানসিক সংকল্প সহ বাড়ির মূল দরজার ওপরে ঝুলিয়ে রাখুন।
👩👧 ৪. সন্তান কামনায়:
- মা কালীর সামনে একটি নারকেল, পাঁচটি ফল, এবং সাদা পদ্ম নিবেদন করুন।
- অন্তঃকরণ থেকে প্রার্থনা করলে মা ফল প্রদান করেন।
🪔 বিশেষ নির্দেশিকা:
- এই দিনে কোনোভাবেই মাংস-মদ গ্রহণ করা যাবে না।
- যতটা সম্ভব নিরামিষ, একবেলা আহার করে মা-কে তুষ্ট করার চেষ্টা করুন।
- পূজার পর সম্ভব হলে তিল, ছোলা, কাপড় বা তামার পাত্র দান করুন।
🧘 আধ্যাত্মিক উপকারিতা:
✅ কর্মফল নাশ হয়
✅ আর্থিক উন্নতি ঘটে
✅ পরিবারে শুদ্ধতা আসে
✅ মানসিক শান্তি বাড়ে
✅ রহস্যময় তান্ত্রিক বাধা দূর হয়
📌 ভক্তদের উদ্দেশ্যে সতর্ক বার্তা:
এই পূজার সময় রাত্রিকালীন তন্ত্রক্রিয়া ও টোটকা অত্যন্ত ফলদায়ী হয়। তবে কোনও অপরিশুদ্ধ মনে ও কৌতুহলবশত এই দিনটিকে ব্যবহার করা উচিত নয়। ভক্তিভরে মন্ত্রপাঠ ও দীক্ষিত তান্ত্রিকের পরামর্শে যেকোনো রীতিনীতি মেনে চলাই উত্তম।