Skip to Content

৯০% বাবা-মা ভুলভাবে শাসন করেন! আপনি কি তাদের মধ্যে একজন?

শিশুরা স্বভাবতই কৌতূহলী ও প্রাণবন্ত। তাদের দুষ্টুমি বা জেদ মাঝে মাঝে পিতামাতাকে হতাশ করে তোলে, ফলে আমরা রেগে গিয়ে কঠোর শাস্তির পথ বেছে নিই।
6 জুন, 2025 by
৯০% বাবা-মা ভুলভাবে শাসন করেন! আপনি কি তাদের মধ্যে একজন?
Joydev Sastri

কিন্তু শাস্তি দিলে শিশু সাময়িকভাবে শান্ত হলেও তার মনে জমা হয় ভয়, হীনমন্যতা ও ক্ষোভ। তাই, শাসন ও শাস্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝা জরুরি। এই নিবন্ধে আমরা শিশুদের ইতিবাচকভাবে শৃঙ্খলা শেখানোর কিছু কার্যকর কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।

১. শিশুর আচরণের কারণ বুঝুন

প্রতিটি আচরণের পেছনে একটি কারণ থাকে। শিশুরা তাদের আবেগ প্রকাশের জন্য কথার বদলে আচরণের মাধ্যম বেছে নেয়।

কেন শিশুরা জেদ করে?

  • অভিমান বা হতাশা: হয়তো তারা কিছু চেয়েছে, কিন্তু পায়নি।
  • ক্লান্তি বা ক্ষুধা: শারীরিক অস্বস্তি তাদের বিরক্ত করে তুলতে পারে।
  • মনোযোগের অভাব: শিশু যদি মনে করে যে তাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, তাহলে সে জেদ করে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

সমাধান: শিশুর আচরণের পেছনের কারণ খুঁজে বের করুন। তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী সাড়া দিন।

২. শিশুর কথা শুনুন, তারপর বলুন

শিশুরাও নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে চায়। তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলে তারা শেখে যে তাদের মতামতের মূল্য আছে।

কিভাবে শুনবেন?

  • চোখের স্তরে নেমে আসুন: শিশুর সাথে কথা বলার সময় তার চোখের সমান্তরালে বসুন।
  • প্রতিক্রিয়া দিন: "আমি বুঝতে পারছি তুমি রাগ করেছ" – এমন বাক্য দিয়ে তার অনুভূতি স্বীকার করুন।
  • বিরক্ত না হওয়া: শিশু যদি আবেগপ্রবণ হয়, তাকে শান্ত হতে দিন, তারপর কথা বলুন।

৩. সীমা নির্ধারণ করুন (ভালোবাসার সাথে)

শিশুদের সীমা বুঝতে শেখানো জরুরি, তবে তা কঠোরতা নয়, দৃঢ়তার সাথে করতে হবে।

কিভাবে "না" বলবেন?

  • শান্ত ও স্পষ্ট ভাবে: "তুমি এখন আইসক্রিম খেতে পারবে না, কারণ রাত হয়ে গেছে।"
  • বিকল্প দেওয়া: "আইসক্রিম এখন না, কিন্তু তুমি ফল খেতে পারো।"
  • ধারাবাহিকতা রাখুন: একদিন "না" বলে পরের দিন "হ্যাঁ" বললে শিশু বিভ্রান্ত হয়।

৪. শাস্তি নয়, টাইম-আউট দিন

শাস্তি দিলে শিশু ভয় পায়, কিন্তু টাইম-আউট তাকে নিজের আচরণ নিয়ে ভাবতে শেখায়।

টাইম-আউট কিভাবে দেবেন?

  • নির্দিষ্ট স্থান: একটি নির্দিষ্ট জায়গায় (যেমন চেয়ার বা কোণা) কিছু সময়ের জন্য বসতে বলুন।
  • সময়সীমা: সাধারণত ১ মিনিট প্রতি বয়সের বছর (৩ বছরের শিশুর জন্য ৩ মিনিট)।
  • ব্যাখ্যা করুন: "তুমি ভাইকে ধাক্কা দিয়েছ, তাই এখন এখানে বসে ভাবো কেন এটা ঠিক নয়।"

৫. আপনি যা করবেন, শিশু তাই শিখবে

শিশুরা পিতামাতাকে অনুকরণ করে। আপনার আচরণই তার জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা।

ইতিবাচক আচরণের উদাহরণ:

  • রাগ নিয়ন্ত্রণ: আপনি যদি শান্তভাবে সমস্যার সমাধান করেন, শিশুও তা শিখবে।
  • ভালোবাসা দেখানো: স্নেহ ও সমর্থন দিলে শিশু আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।
  • দায়িত্ববোধ: নিয়ম মেনে চললে শিশুও শৃঙ্খলাবোধ গড়ে তুলবে।

শিশুকে শাস্তি দিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়ে শেখালে সে আত্মবিশ্বাসী ও সুশৃঙ্খল হয়ে বেড়ে উঠবে। মনে রাখবেন, শেকড় যত মজবুত হবে, গাছ তত উঁচুতে উঠবে। শিশুর মন কোমল, তাই তাকে সহানুভূতি ও ধৈর্য্য দিয়ে গড়ে তুলুন।

৯০% বাবা-মা ভুলভাবে শাসন করেন! আপনি কি তাদের মধ্যে একজন?
Joydev Sastri 6 জুন, 2025
Share this post
Tags
Archive